ইউরোপ ও এশিয়ার কেন্দ্রস্থল, বিশ্বের সেরা পর্যটন নগরীদের মাঝে আসন করে নেওয়া ওসমানী খিলাফতের রাজধানী ইস্তান্বুলে ঈদ যাপন পৃথিবীর ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের প্রাণের আকাঙ্ক্ষা। তুরস্কে ঈদুল ফিতর ৪ মে মঙ্গলবার উদযাপিত হয় ।
ইস্তান্বুলে বাংলাদেশী কমিউনিটির মাঝে ঈদের আনন্দ ছড়িয়ে দিতে Bangladesh Students’ Association Istanbul, Turkey দিনব্যাপী বর্ণিল ঈদ উৎসবের আয়োজন করে।
পূর্বাকাশে সূর্যের আগমনী বার্তা জানান দেওয়ার পর ইস্তান্বুলের মসজিদগুলোতে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সহিত ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। পৃথিবীর সেরা মসজিদগুলির মাঝে স্থান করে নেওয়া ইস্তান্বুলের সুলতান আহমেদ মসজিদে (Blue Mosque) অধিকাংশ বাংলাদেশী ঈদের নামাজ সম্পাদন করে।

ঈদের নামাজের পরপর আমাদের সংস্কৃতির নিদর্শন পারস্পরিক কুশল বিনিময় হয়। এরপরে সম্মিলিতভাবে সকালের নাস্তা গ্রহণ করে।
পূর্বনির্ধারিত সময়ানুযায়ী ইস্তান্বুলের শহরকেন্দ্র থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে নান্দনিক পর্যটন স্থান polonezköy তে আনন্দভোজ ও পুনর্মিলনী উপলক্ষে সকাল ১০:০০’টায় প্রায় শতজনের অংশগ্রহণে আকসারায় থেকে দুইটি বড় গাড়ি করে যাত্রা আরম্ভ করে।
গাড়িতে সকলের সরব উপস্থিতি বিশেষ করে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক আয়োজনে পুরো পথ জুড়ে এক উৎসবের স্মৃতি গড়ে তুলেছে। বসফরাস প্রণালী, পাহাড় ও গ্রামের আঁকাবাঁকা পথে সবুজ শ্যামল দৃশ্য এ যাত্রা আরো শৈল্পিক রূপ ধারণ করে।
দুপুর গড়ার পূর্বেই কাঙ্ক্ষিত জায়গায় গাড়ি পৌঁছে যায়। গাড়ি থেকে নামতে না নামতে খেলাপ্রেমীরা মাঠের দিকে ছুটে পড়ে। একদিকে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের উত্তাপ অন্যদিকে দূর প্রবাসে খেলার আমেজ এ যেন একসূত্রে গেঁথে গেল। চারটি দলে বিভক্ত হয়ে খেলা আরম্ভ হয়। ইতোমধ্যে মারমারা বিশ্ববিদ্যালয় আলতেনবাশ বিশ্ববিদ্যালয়কে ও সাবাহউদ্দিন জাইম বিশ্ববিদ্যালয় ইবনে খালদুন বিশ্ববিদ্যালয়কে হারিয়ে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে পরস্পর মুখোমুখি হয়। খেলায় জাইম বিশ্ববিদ্যালয় মারমারা বিশ্ববিদ্যালয়কে হারিয়ে বিজয় লাভ করে।
অন্যদিকে অভিজ্ঞ দেশীয় পদ্ধতিতে রকমারি খাবারের আয়োজন চলতে থাকে। মাঙ্গাল (বারবিকিউ) আয়োজনের সময় ঘ্রাণে ক্ষুধার মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে। অতঃপর খেলার পরে সবাই দুপুরের খাবার গ্রহণ করে।
বিকাল গড়ানোর খানিক পূর্বেই এসোসিয়েশনের কার্যনির্বাহী সদস্য মিমার সিনান বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি অধ্যয়নরত জনাব আ.ব.ম নুরুল আবছার এর সঞ্চালনায় বর্ণিল উৎসবের আয়োজন আরম্ভ হয়। হাঁড়ি ভাঙা খেলা, মহিলাদের বালিশ খেলা, বাচ্চাদের বেলুন খেলা, বিবাহিত ও অবিবাহিতদের জনপ্রিয় দড়ি টানাটানি খেলা হয়। দড়ি খেলায় অবিবাহিত দল জয়লাভ করে। পাশাপাশি উপস্থিত অভিনয় প্রতিযোগিতা হয়। এছাড়াও পারস্পরিক পরিচিতি পর্ব ও ঈদ স্মৃতি বর্ণনা থাকে। সন্ধ্যা গড়ানোর পূর্বে পুরস্কার বিতরণ পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। বর্ণিল এই আয়োজনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণের জন্য সবাইকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়েছেন অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জনাব মুমিন এবং সেক্রেটারী জেনারেল ওমর ফারুক হেলালী।
সবশেষে অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জনাব মুমিন সমাপনী বক্তব্য প্রদান করে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
এদিকে বাংলাদেশ কনস্যুলেট ইস্তান্বুল কর্তৃক আয়োজিত ঈদ উদযাপন অনুষ্ঠানে সবাই একযোগে অংশগ্রহণ করে।
অনুষ্ঠানে মান্যবর কনস্যাল জেনারেল জনাব ড. মনিরুল ইসলাম সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠান শেষে সবাই সান্ধ্যকালীন ভোজ গ্রহণ করে।
সংবাদদাতা:- আবদুল্লাহ মুহাম্মদ জাভেদ (A M Zaved Rakib) , মারমারা বিশ্ববিদ্যালয়